প্রকাশিত: ২৯/০৬/২০১৬ ৯:৪৬ এএম

146121_1বেইজিং: দক্ষিণ চীন সাগরের তলায় আরও একটা ‘গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’ বা চীনের মহাপ্রাচীর বানাচ্ছে বেইজিং। বানানো হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৭০ কিলোমিটার ওপরে থাকা আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস)-এর ধাঁচে বানানো আরো একটি ‘মহাকাশ স্টেশন’- সমুদ্রের তলায়!

দক্ষিণ চীন সাগরের তলার সেই ‘মহাকাশ স্টেশনে’ও থাকবেন, যাওয়া-আসা করবেন ‘জলচর’ মানুষরা!

শুনলে হয়তো চমকে যাবেন! কিন্তু এটা সত্যি, দক্ষিণ চীন সাগরের ৩ হাজার মিটার বা ৯৮০০ ফুট নীচে চীন বানাচ্ছে ওই ‘মহাকাশ স্টেশন’।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট, দক্ষিণ চীন সাগরেই রোবট দিয়ে বানানো হচ্ছে আরো একটি ‘গ্রেট ওয়াল’। যার উচ্চতা ও বিস্তারটা হবে একেবারে মাথার ওপর উঁচিয়ে থাকা চিনের প্রাচীরের মতোই!

কিন্তু দক্ষিণ চীন সাগরের তলায় কেন ওই দু’টি ‘মেগা-স্ট্রাকচার’ বানাচ্ছে চীন?

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট আর মহাকাশ থেকে ‘নজরদারি’ উপগ্রহগুলোর পাঠানো ছবি জানাচ্ছে, সমুদ্রের তলায় ওই ‘গ্রেট ওয়াল’ বানানো হচ্ছে রোবট আর ড্রোন দিয়ে। সমুদ্রের তলায় ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকা শত্রু পক্ষের সাবমেরিনগুলোর অবস্থান আর গতিবিধির ওপর সব সময় নজর রাখার জন্যই বানানো হচ্ছে ওই দু’নম্বর ‘গ্রেট ওয়াল’।

আর ওই সমুদ্রের তলাতেই যে ‘মহাকাশ স্টেশন’টি বানাচ্ছে চীন, তার কাজ হবে মূলত দু’টি। এক, সেটি ওই দু’নম্বর ‘গ্রেট ওয়াল’-এর নজরদারির কাজকর্মের ওপর নজর রাখবে। তাকে বেতার তরঙ্গে নির্দেশ পাঠাবে আর সমুদ্রের তলায় থাকা ওই ‘গ্রেট ওয়াল’ থেকে পাঠানো যাবতীয় তথ্য রেকর্ড করবে ও তা বিশ্লেষণ করবে। আর সেই সব গোপন তথ্য পাঠাবে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় আর ‘রেড আর্মি’র কাছে। নাসা ও ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির ‘গ্রাউন্ড স্টেশন’ আর মহাকাশের সুদূরতম প্রান্তের সঙ্গে যেভাবে যোগাযোগ রাখে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন।

আর তার দ্বিতীয় কাজটি হবে, সমুদ্রের তলায় লুকিয়ে থাকা বিভিন্ন খনিজ পদার্থের সন্ধান করা।

কেন সেটাকে ‘মহাকাশ স্টেশন’ বলা হচ্ছে?

কারণ, সমুদ্রের অতটা গভীরতায় ওই স্টেশনের ভেতরটাও বানানো হচ্ছে অবিকল আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের আদলে। আর মহাকাশে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনটিও যেমন কক্ষপথে ঘোরার সময় তার অবস্থান বদলায়, তেমনই দক্ষিণ চীন সাগরের তলায় চীন যে ‘মহাকাশ স্টেশন’টি বানাচ্ছে, সেটিও প্রয়োজনে তার অবস্থান বদলাতে পারবে, যখন-তখন। তা যতই ‘মেগা-স্ট্রাকচার’ হোক না কেন।

কোনো সমুদ্রেরই এতটা গভীরতায় কোনো দেশই এখনো পর্যন্ত ‘মহাকাশ স্টেশন’ বা অত বড় প্রাচীর বানানোর সাহস দেখায়নি! যেটা আরো তাৎপর্যের, তা হলো, ওই দু’টি ‘মেগা-স্ট্রাকচার’ বানানোর জন্য চীন যে জায়গাটিকে বেছে নিয়েছে, সেটি হল দক্ষিণ চীন সাগর। যে এলাকার দখলদারি নিয়ে জাপান, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছে চীন। এর প্রেক্ষিতে আমেরিকাকেও রণতরী পাঠাতে হয়েছে দক্ষিণ চীন সাগরে।

দিন কয়েক আগে ঘটা করে চীনের সামরিক কর্তারা প্রকাশ্যেই ওই রোবট আর ড্রোন বানানোর কথা ঘোষণা করেছেন। সাংবাদিকদের ডেকে দেখিয়েছেন ড্রোনগুলো। যেগুলো স্থলে ও জলে আর সমুদ্রের বিভিন্ন গভীরতায় সমানভাবেই কর্মক্ষম ও পারদর্শী। ওই ড্রোনগুলোতে সাবমেরিন-বিধ্বংসী পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রও থাকবে। থাকবে জল থেকে আকাশে ছোঁড়ার জন্য দূর পাল্লার আন্তর্মহাদেশীয় ব্যালিস্টিক মিসাইলও।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

পাঠকের মতামত

মার্কিন সহায়তা স্থগিত:থাই হাসপাতাল ছাড়ছে মিয়ানমারের শরণার্থীরা

বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্বজুড়ে। ইতোমধ্যেই ...

বাংলাদেশেও সব মার্কিন সহায়তা বন্ধ, জানিয়ে দিল ইউএসএআইডি

মার্কিন সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন সব প্রকল্প ও কর্মসূচির ব্যয় অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশনা ...

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশের সাথে কাজ করবে ইউএনএইচসিআর

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেছেন যে তার সংস্থা রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধান খুঁজে ...

যুক্তরাষ্ট্রের সব বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ করলেন ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের বৈদেশিক সহায়তা কর্মসূচি বন্ধ ঘোষণা করেছেন সদ্য শপথ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ...

নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত করবে জাতিসংঘ

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির হাতে নির্যাতনের শিকার হওয়া রোহিঙ্গাদের বিষয়ে তদন্ত কর‌বে জাতিসংঘ। মিয়ানমারে ...